মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

হাওরে রাস্তা করে নিজের পায়ে কুড়াল মারছি  -পরিকল্পনামন্ত্রী

 

স্টাফ রিপোর্টার: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, আমার বাড়ি হাওর অঞ্চলে। এসব অঞ্চলে রাস্তাঘাটের প্রয়োজন আছে। কিন্তু আমরা টের পাচ্ছি যে, হাওরের মধ্যে রাস্তাঘাট নির্মাণ করে আমরা নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারছি। তিনি বলেন, বাঁধ নির্মাণে আদতে আমাদেরই ক্ষতি হবে। ফলে আমরা বাঁধ নির্মাণ সংক্রান্ত যেকোনো প্রকল্প যাচাই বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। এ ছাড়া হাওরের পাখিদেরও রক্ষা করতে হবে।

গতকাল শনিবার পরিবেশ দূষণ ও প্রতিকার-শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ সেন্টার ফর হলিস্টিক স্টাডিজ। বাংলাদেশ সেন্টার ফর হলিস্টিক স্ট্যাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের সেন্ট্রাল পলিউশন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস পি গৌতম।  আলোচক হিসেবে ছিলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভাইরনমেন্টাল সাইন্স অনুষদের ডিন ড. মো. জিল্লুর রহমান, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মিহির কান্তি মজুমদার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী অখিল কুমার বিশ্বাস,  পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (সিপিআরডি) প্রধান নির্বাহী মো. সামসুদ্দোহা ।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতাই হলো প্রথম পদক্ষেপ, যেটা খুবই দরকার। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে খুবই সচেতন। তার নানা কাজের মধ্যে এর প্রমাণ আছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের এই বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। আমরা কাজ করি। তিনি হাওর অঞ্চলে আর বাঁধ নির্মাণ না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন, যেটি সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত। তিনি আরও বলেন, আরেকটি নির্দেশনা আছে যে, নতুন শিল্প কারখানা স্থাপন করতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে ইটিপি স্থাপন করতে হবে। 

মন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের কিছু ওভারল্যাপিং আছে। আমি নিজেও দেখেছি, সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় গভীরভাবে নেওয়া হয় না। যেকোনো সমস্যায় তুলনামূলক জুনিয়রদের পাঠানো হয়। সে হয়তো গভীরতাটা বুঝতে পারে না। মহাবিশ্ব নিজেকে প্রতিনিয়ত ভাঙছে আর গড়ছে। তার সঙ্গে সমন্বয় করেই আমাদের থাকতে হবে। তিনি বলেন, রিকশায় কোনো পলিউশন নেই। একজন রিকশাওয়ালা ৫০-৬০ বছর ধরে রিকশা চালান। কিন্তু আমরা কি পারব তাদের শেষ বয়সে একটি স্বাস্থ্যকর জীবন উপহার দিতে? সমাজে যারা দরিদ্র-বঞ্চিত মানুষ, তারা কেউই দরিদ্র হয়ে জন্মায় না। সামাজিক গ্যাঁড়াকলে পড়ে তাদের এই অবস্থা হয়।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক বলেন, যেকোনো সমস্যা বা পরিস্থিতিতে তিনটি বিষয় দরকার। এক, আইন বা পদক্ষেপ, দুই সেই আইন বা পদক্ষেপের বাস্তবায়ন ও তিন অংশীদার। এই তিনটিকে এক জায়গায় সমন্বয় করে আমাদের যেকোনো সমস্যা সমাধানের আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য আমাদের শিল্পায়ন ও শিল্পনগরী দরকার। কিন্তু একইসঙ্গে আমাদের পরিবেশের দিকটাও দেখতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নগরায়ন ও অভিবাসন। এসব সমস্যা সমাধানে আমাদের সমন্বিত আলোচনা দরকার। আপনারা অংশীদাররা আলোচনা করে আমাদের সমাধানের পরামর্শ দিন। আমরা তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ